ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গার ঈদ বাজারে দেশীয় পোশাকের কদর

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯
  • / ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
আর মাত্র সপ্তাহ দু’য়েক পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। তীব্র তাপদাহের মধ্যে দিয়ে আলমডাঙ্গা শহর কেন্দ্রিক বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। এবারের ঈদকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরায় আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক নিরাপত্তার দিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে আলমডাঙ্গার পুলিশ প্রশাসন। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, গত রমজানের চেয়ে এবারের বেচা-কেনার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় ক্রেতা সংখ্যা বাড়ছেই।
আলমডাঙ্গার রিয়াদ কমপ্লেক্স, পাইলট হাইস্কুল মার্কেটসহ কাপড়ের দোকানগুলোতে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। পোশাক, কসমেটিক্স এবং জুতার দোকানগুলোও বেচা-বিক্রি বাড়ছে সমান তালে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসবে, বিক্রিও বাড়বে। গরম উপেক্ষা করে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্রেতারা। ফলে জমছে ঈদ বাজার। ঈদে নতুন পোশাক কিনতে হবে। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে ঝলমলে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাপক সাধারণ মানুষের ঢল হওয়ায় চোর চক্রের সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীরা।
আলমডাঙ্গা পাইলট স্কুল মার্কেটের দোকান মালিকরা জানান, ‘এবারও নারীদের পছন্দের চাহিদায় অনুসারে ভারতীয় পোশাকের চাইতে তীব্র গরমে বেড়েছে হালকা দেশীয় পোশাকের কদর। গত বছর ভারতীয় সিরিয়ালের নামানুসারে বেশ কিছু পোশাক বাজারে ব্যাপক হারে স্থান লাভ করলেও এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ। তবে তীব্র গরমের কারণে টিস্যু কাপড় এবং সুইচ কটোনের পোশাকের চাহিদা বেশি। এছাড়া গাউন, কোটি, ওয়ান পিসের চাহিদাও রয়েছে। তবে এখনও সেভাবে পোশাকের নাম আসেনি।’
এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ‘ক’দিন পর মার্কেটে ঢোকা মুশকিল হবে। রোজা প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। দিন দিন তুলনামূলক প্রতিটা জিনিসের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এখন না কিনলে পরে চাহিদা মত জিনিস পাওয়াটা কষ্টকর হয়ে উঠবে। বর্তমানে সারাদেশে তীব্র তাপদহ চলছে। তাই ছেলে-মেয়ের জন্য পোশাক নিলাম।’
মার্কেট করতে আসা আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজের কিছু ছাত্রী জানান, ‘গত বছরের চেয়ে এবার তীব্র গরম পড়লেও আলমডাঙ্গায় অধিকাংশ দোকানের সামনে বাড়তি স্টান্ড ফ্যান লাগিয়েছে, আরো অনেক দোকানে এসি লাগিয়েছে,। তাই গরমের কারণে দ্রুত ঈদের কেনাকাটা শেষ করলাম। গত বছর ভারতী পোশাকের কদর থাকলেও এবার তীব্র গরমের কারণে হালকা পোশাক দেশীয় কাপড়ের দিকেই ঝুকছে সবাই। গরমের কারণে হালকা ধরনের কসমেটিক্স ও জুয়েলারি নিচ্ছি। এবছর প্রতিটা দোকানে নিত্যনতুন কালেকশন এসেছে। জামা কিনতে গেলে প্রত্যেকটাই পছন্দ হয়।’
রিয়াদ কমপ্লেক্সের দোকান এক মালিক জানান, ‘চাকরিজীবীদের কাছে বোনাসের টাকা আসতে শুরু করেছে। বোনাসের টাকা আসলে বেচাকেনা আরও বাড়বে। তবে এখনও বেচাকেনা কম নয়। এবার যুবকরা পাঞ্জাবির পাশাপাশি জিন্স প্যান্টের প্রতি ঝুঁকছে বেশি। গত বছর ফুল শার্ট বিক্রয় হলেও এবার টি-শার্ট ও পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি।’
আলমডাঙ্গা শহরের দোকানে পোশাক ক্রেতারা দাবি করেন, ‘প্রতি রমজানসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় জিনিসের দাম তুলনামূলক কয়েক গুন বৃদ্ধি পায়। এবারও সঠিক দামের চাইতেও ডাবল দামে বিক্রয় করা হচ্ছে পোশাক। তবে দাম বেশি হলেও পোশাকগুলো মানসম্পন্ন। ঈদ যত এগিয়ে আসছে, বাজারে ভিড় তত বাড়ছে। তাই আগে থেকেই কেনকাটা সেরে রাখতে আগাম বাজারে আসা।’
আলমডাঙ্গা থানার ওসি আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, ‘আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে আলমডাঙ্গা বাজারসহ ইউনিয়নের প্রতিটা শপিং কমপ্লেক্সে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ চুরি চক্রের সাথে কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায় তাদের বরদাস্ত করা হবে না। যারা আইন লঙ্ঘন করবে তাদের দ্রুত আইনের আওতাই আনা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গার ঈদ বাজারে দেশীয় পোশাকের কদর

আপলোড টাইম : ১০:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
আর মাত্র সপ্তাহ দু’য়েক পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। তীব্র তাপদাহের মধ্যে দিয়ে আলমডাঙ্গা শহর কেন্দ্রিক বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। এবারের ঈদকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরায় আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক নিরাপত্তার দিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে আলমডাঙ্গার পুলিশ প্রশাসন। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, গত রমজানের চেয়ে এবারের বেচা-কেনার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় ক্রেতা সংখ্যা বাড়ছেই।
আলমডাঙ্গার রিয়াদ কমপ্লেক্স, পাইলট হাইস্কুল মার্কেটসহ কাপড়ের দোকানগুলোতে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। পোশাক, কসমেটিক্স এবং জুতার দোকানগুলোও বেচা-বিক্রি বাড়ছে সমান তালে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসবে, বিক্রিও বাড়বে। গরম উপেক্ষা করে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্রেতারা। ফলে জমছে ঈদ বাজার। ঈদে নতুন পোশাক কিনতে হবে। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে ঝলমলে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাপক সাধারণ মানুষের ঢল হওয়ায় চোর চক্রের সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীরা।
আলমডাঙ্গা পাইলট স্কুল মার্কেটের দোকান মালিকরা জানান, ‘এবারও নারীদের পছন্দের চাহিদায় অনুসারে ভারতীয় পোশাকের চাইতে তীব্র গরমে বেড়েছে হালকা দেশীয় পোশাকের কদর। গত বছর ভারতীয় সিরিয়ালের নামানুসারে বেশ কিছু পোশাক বাজারে ব্যাপক হারে স্থান লাভ করলেও এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ। তবে তীব্র গরমের কারণে টিস্যু কাপড় এবং সুইচ কটোনের পোশাকের চাহিদা বেশি। এছাড়া গাউন, কোটি, ওয়ান পিসের চাহিদাও রয়েছে। তবে এখনও সেভাবে পোশাকের নাম আসেনি।’
এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ‘ক’দিন পর মার্কেটে ঢোকা মুশকিল হবে। রোজা প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। দিন দিন তুলনামূলক প্রতিটা জিনিসের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এখন না কিনলে পরে চাহিদা মত জিনিস পাওয়াটা কষ্টকর হয়ে উঠবে। বর্তমানে সারাদেশে তীব্র তাপদহ চলছে। তাই ছেলে-মেয়ের জন্য পোশাক নিলাম।’
মার্কেট করতে আসা আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজের কিছু ছাত্রী জানান, ‘গত বছরের চেয়ে এবার তীব্র গরম পড়লেও আলমডাঙ্গায় অধিকাংশ দোকানের সামনে বাড়তি স্টান্ড ফ্যান লাগিয়েছে, আরো অনেক দোকানে এসি লাগিয়েছে,। তাই গরমের কারণে দ্রুত ঈদের কেনাকাটা শেষ করলাম। গত বছর ভারতী পোশাকের কদর থাকলেও এবার তীব্র গরমের কারণে হালকা পোশাক দেশীয় কাপড়ের দিকেই ঝুকছে সবাই। গরমের কারণে হালকা ধরনের কসমেটিক্স ও জুয়েলারি নিচ্ছি। এবছর প্রতিটা দোকানে নিত্যনতুন কালেকশন এসেছে। জামা কিনতে গেলে প্রত্যেকটাই পছন্দ হয়।’
রিয়াদ কমপ্লেক্সের দোকান এক মালিক জানান, ‘চাকরিজীবীদের কাছে বোনাসের টাকা আসতে শুরু করেছে। বোনাসের টাকা আসলে বেচাকেনা আরও বাড়বে। তবে এখনও বেচাকেনা কম নয়। এবার যুবকরা পাঞ্জাবির পাশাপাশি জিন্স প্যান্টের প্রতি ঝুঁকছে বেশি। গত বছর ফুল শার্ট বিক্রয় হলেও এবার টি-শার্ট ও পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি।’
আলমডাঙ্গা শহরের দোকানে পোশাক ক্রেতারা দাবি করেন, ‘প্রতি রমজানসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় জিনিসের দাম তুলনামূলক কয়েক গুন বৃদ্ধি পায়। এবারও সঠিক দামের চাইতেও ডাবল দামে বিক্রয় করা হচ্ছে পোশাক। তবে দাম বেশি হলেও পোশাকগুলো মানসম্পন্ন। ঈদ যত এগিয়ে আসছে, বাজারে ভিড় তত বাড়ছে। তাই আগে থেকেই কেনকাটা সেরে রাখতে আগাম বাজারে আসা।’
আলমডাঙ্গা থানার ওসি আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, ‘আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে আলমডাঙ্গা বাজারসহ ইউনিয়নের প্রতিটা শপিং কমপ্লেক্সে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ চুরি চক্রের সাথে কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায় তাদের বরদাস্ত করা হবে না। যারা আইন লঙ্ঘন করবে তাদের দ্রুত আইনের আওতাই আনা হবে।’