ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আমদানির নামে টাকা পাচার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ২২৫ বার পড়া হয়েছে

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
গত অক্টোবর মাসে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়ে। ৩৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এখনো খুচরা বাজারে পেঁয়াজ সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাজারে সংকট দেখা দেওয়ার পর ভারতের বাইরে অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। প্রতিবেশী মিয়ানমার, পাকিস্তান, চীন ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার জন্য এলসি করা হয়। আর এই পেঁয়াজ আমদানি করতে গিয়েই ২০০ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়ে গেছে বলে মনে করছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে আনা প্রতি টন পেঁয়াজের দাম ৫০০ মার্কিন ডলার ঘোষণা করলেও প্রকৃতপক্ষে আমদানিকারকরা প্রতি টন এক হাজার ২০০ ডলারে ক্রয় করেছেন। অর্থাৎ প্রতি টন পেঁয়াজ ক্রয়ে প্রায় ৭০০ ডলার আন্ডারইনভয়েসিং করেছেন। ফলে মিয়ানমার থেকে আমদানিকারকরা পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ৪৪ টাকা কেজি দেখালেও বাজারে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এই আন্ডারইনভয়েসিংয়ের টাকা আমদানিকারকরা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং করে পাঠিয়েছেন বলে মনে করছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। সংস্থাটি এর বিশদ অনুসন্ধানের জন্য এনবিআরের অনুমতি চেয়েছে প্রতিবেদনে। অনুসন্ধানের সূত্র ধরে জানা যায়, আমদানিকারকরা পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম যখন ৪৪ টাকা কেজি দেখান, তখন মিয়ানমারের বাজারেই এসব পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে দেশটি থেকে মোট ৩৪ হাজার ৮৬১ টন পেঁয়াজ আমদানির আড়ালে এ মুদ্রা পাচার হয়। আন্ডারইনভয়েসিংয়ের টাকা আমদানিকারকরা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং করে পাঠিয়েছেন বলে মনে করছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা দ-নীয় অপরাধ। আবার একটি সংকটকে পুঁজি করে দেশের টাকা বাইরে পাচার আরো বড় অপরাধ বলে আমরা মনে করি। যে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি এ বিষয়ে আরো বিশদ তদন্ত করে অপরাধীদের চিহ্নিত করা দরকার। এই সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে ভবিষ্যতে দেশ আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আমদানির নামে টাকা পাচার!

আপলোড টাইম : ১১:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
গত অক্টোবর মাসে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়ে। ৩৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এখনো খুচরা বাজারে পেঁয়াজ সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাজারে সংকট দেখা দেওয়ার পর ভারতের বাইরে অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। প্রতিবেশী মিয়ানমার, পাকিস্তান, চীন ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার জন্য এলসি করা হয়। আর এই পেঁয়াজ আমদানি করতে গিয়েই ২০০ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়ে গেছে বলে মনে করছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে আনা প্রতি টন পেঁয়াজের দাম ৫০০ মার্কিন ডলার ঘোষণা করলেও প্রকৃতপক্ষে আমদানিকারকরা প্রতি টন এক হাজার ২০০ ডলারে ক্রয় করেছেন। অর্থাৎ প্রতি টন পেঁয়াজ ক্রয়ে প্রায় ৭০০ ডলার আন্ডারইনভয়েসিং করেছেন। ফলে মিয়ানমার থেকে আমদানিকারকরা পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ৪৪ টাকা কেজি দেখালেও বাজারে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এই আন্ডারইনভয়েসিংয়ের টাকা আমদানিকারকরা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং করে পাঠিয়েছেন বলে মনে করছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। সংস্থাটি এর বিশদ অনুসন্ধানের জন্য এনবিআরের অনুমতি চেয়েছে প্রতিবেদনে। অনুসন্ধানের সূত্র ধরে জানা যায়, আমদানিকারকরা পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম যখন ৪৪ টাকা কেজি দেখান, তখন মিয়ানমারের বাজারেই এসব পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে দেশটি থেকে মোট ৩৪ হাজার ৮৬১ টন পেঁয়াজ আমদানির আড়ালে এ মুদ্রা পাচার হয়। আন্ডারইনভয়েসিংয়ের টাকা আমদানিকারকরা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং করে পাঠিয়েছেন বলে মনে করছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা দ-নীয় অপরাধ। আবার একটি সংকটকে পুঁজি করে দেশের টাকা বাইরে পাচার আরো বড় অপরাধ বলে আমরা মনে করি। যে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি এ বিষয়ে আরো বিশদ তদন্ত করে অপরাধীদের চিহ্নিত করা দরকার। এই সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে ভবিষ্যতে দেশ আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।