ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আবারও শেয়ারবাজারে ধস, কার্যকর পদক্ষেপ নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:১৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ারেবাজারে ধস নামার বিষয়টি আবারো সামনে আসল। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে যে, ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের সংবাদে কিছুদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার ধস দেখা দিয়েছে। তথ্য মতে, গত বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এ নিয়ে ঘটলো টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন। সঙ্গত কারণে বিষয়টি আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। একইসঙ্গে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ গ্রহণও জরুরি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে স্টেকহোল্ডারদের একটি অংশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়। নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঁচ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো- যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। আর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ সাত শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে বলেও জানা যায়। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এই সুবিধা দেওয়ার ফলে শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। ৪ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে নেমে যাওয়া ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসএক্স হু হু করে বেড়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি ৪ হাজার ৭৫৮ পয়েন্টে চলে আসে। অর্থাৎ পতন কাটিয়ে ১০ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৭৩ পয়েন্ট। কিন্তু এরপরেই ঘটে ছন্দপতন। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া জরুরি যে, জানা যাচ্ছে, এবারে শেয়ারবাজারের এমন টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, ফলে বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। কেননা, বিনিয়োগকারীরা যদি আতঙ্কগ্রস্ত হন তবে তার নেতিবাচক বিষয়কেই স্পষ্ট করবে- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যদিও বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হঠাৎ শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের কারণে এখন টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। শিগগিরই বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও তারা মনে করছেন। আমরাও চাই বাজার স্বাভাবিক হোক এবং সৃষ্ট পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকুক। এ ছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, একজন বিনিয়োগকারীর ভাষ্য মতে, শেয়ারবাজারের আচরণ স্বাভাবিক লাগছে না তার কাছে। টানা পতনের মধ্যে হঠাৎ বড় উত্থান, আবার টানা দরপতন হচ্ছে- ফলে বাজারের এ আচরণ উদ্বেগ ছড়াচ্ছে বলেই তিনি মনে করছেন। যদিও দরপতনের বিষয়টি স্বাভাবিক বলেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক। তিনি বলেছেন, ‘টানা উত্থানের কারণে এখন বাজারে কিছুটা বিক্রির চাপ রয়েছে। যারা আগে কিনেছেন তারা মুনাফা তুলে নেওয়ার জন্য বিক্রি করছেন। এ কারণে বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। এটা স্বাভাবিক। এভাবেই বাজার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, শেয়ারবাজারের টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে এই বিষয়টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি বলেছেন, বাজার ভালো করতে হলে ‘বাই ব্যাক আইন’ কার্যকর করতে হবে। এই বিষয়টিও সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক অর্থে শেয়ারের টানা পতনের বিষয়টি এড়ানো যাবে না। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আবারও শেয়ারবাজারে ধস, কার্যকর পদক্ষেপ নিন

আপলোড টাইম : ০৭:১৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

শেয়ারেবাজারে ধস নামার বিষয়টি আবারো সামনে আসল। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে যে, ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের সংবাদে কিছুদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার ধস দেখা দিয়েছে। তথ্য মতে, গত বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এ নিয়ে ঘটলো টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন। সঙ্গত কারণে বিষয়টি আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। একইসঙ্গে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ গ্রহণও জরুরি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে স্টেকহোল্ডারদের একটি অংশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়। নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঁচ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো- যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। আর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ সাত শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে বলেও জানা যায়। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এই সুবিধা দেওয়ার ফলে শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। ৪ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে নেমে যাওয়া ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসএক্স হু হু করে বেড়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি ৪ হাজার ৭৫৮ পয়েন্টে চলে আসে। অর্থাৎ পতন কাটিয়ে ১০ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৭৩ পয়েন্ট। কিন্তু এরপরেই ঘটে ছন্দপতন। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া জরুরি যে, জানা যাচ্ছে, এবারে শেয়ারবাজারের এমন টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, ফলে বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। কেননা, বিনিয়োগকারীরা যদি আতঙ্কগ্রস্ত হন তবে তার নেতিবাচক বিষয়কেই স্পষ্ট করবে- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যদিও বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হঠাৎ শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের কারণে এখন টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। শিগগিরই বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও তারা মনে করছেন। আমরাও চাই বাজার স্বাভাবিক হোক এবং সৃষ্ট পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকুক। এ ছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, একজন বিনিয়োগকারীর ভাষ্য মতে, শেয়ারবাজারের আচরণ স্বাভাবিক লাগছে না তার কাছে। টানা পতনের মধ্যে হঠাৎ বড় উত্থান, আবার টানা দরপতন হচ্ছে- ফলে বাজারের এ আচরণ উদ্বেগ ছড়াচ্ছে বলেই তিনি মনে করছেন। যদিও দরপতনের বিষয়টি স্বাভাবিক বলেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক। তিনি বলেছেন, ‘টানা উত্থানের কারণে এখন বাজারে কিছুটা বিক্রির চাপ রয়েছে। যারা আগে কিনেছেন তারা মুনাফা তুলে নেওয়ার জন্য বিক্রি করছেন। এ কারণে বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। এটা স্বাভাবিক। এভাবেই বাজার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, শেয়ারবাজারের টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে এই বিষয়টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি বলেছেন, বাজার ভালো করতে হলে ‘বাই ব্যাক আইন’ কার্যকর করতে হবে। এই বিষয়টিও সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক অর্থে শেয়ারের টানা পতনের বিষয়টি এড়ানো যাবে না। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।