ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আদেশ থাকলেও সড়কে দেওয়া হচ্ছে না পানি : জনগণের ভোগান্তি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৭:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা রেলগেট থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত পুরো সড়ক ছেয়ে গেছে ধুলাবালিতে
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রশাসনের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরে রাস্তায় পানি না দেওয়ায় ধুলাবালিতে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে শহরে চলাচলরত হাজারো জনতা। সেই সাথে রাস্তার ধারে ব্যবসায়ীরা ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অনেকে ধুলাবালির হাত থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করলেও তা কোন কাজে আসছে না। বড়বাজার থেকে রেলবাজার পর্যন্ত রাস্তার একাংশের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় কিছুটা পানি দেয়া হচ্ছে। তবে রেলগেটের পর থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত রাস্তার কাজ শুরু না হওয়ায় ধুলায় মরুভুমিতে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী এই সড়কে প্রতিদিন সকাল-বিকাল পানি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আহবান জানিয়েছেন।
সড়ক বিভাগ জানায়, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২ বছর আগে। চুয়াডাঙ্গা অংশে ১৮.২৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করনের কাজ গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয়েছে। এ কাজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে শহরের বড় বাজার শহীদ চত্বর থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ২.২ কিলোমিটার হবে ৪ লেন। ফুটপাত সহ রাস্তাটি ৫৪ ফুট প্রসস্ত হবে অর্থাৎ ডিভাইডারের উভয় পাশে রাস্তাটি চওড়া হবে ২৭ ফুট। অনেক চেষ্টা তদবিরের পর গত বছরের ২০ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা শহরের ২.২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বড়বাজার থেকে রেলবাজার পর্যন্ত এক সাইডের কাজ চলমান রয়েছে। আর শহরের বাইরে রাস্তাটি হবে ফুটপাতসহ ৩০ ফুট প্রসস্ত। রাস্তাটি নির্মানে ঠিকাদার নিযুক্ত হয়েছেন আরএবি-আরসি প্রা: লি:, রানা বিল্ডার্স ও জহুরুল ইসলাম।
এদিকে রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় শহরজুড়ে ধুলা বালিতে ছেয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। ধুলা বালির কারনে রাস্তায় চলাচলরত মানুষের দৃষ্টিসীমা নিকটে চলে এসেছে। ৪০-৫০ গজ দুরের কোন বস্তু দেখা যায়না। টার্মিনাল থেকে বড়বাজার একবার আপ-ডাউন করলে তার অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে। সবচয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে প্রধান সড়কের ধারে রয়েছে যাদের দোকান। বেশিরভাগ দোকানি জানালেন ধুলায় তাদের দোকানের মাল নষ্ট হয়ে গেছে। কেনাবেচা কমে গেছে।
চুয়াডাঙ্গার ঝিনাইদহ বাসষ্টান্ডপাড়ার বাসিন্দা ও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বিপুল আশরাফ এবং চায়ের দোকানি ছানোয়ার বলেন, রেলবাজার থেকে বড়বাজার সড়কে মাঝে মাঝে রাস্তায় পানি দেয়া হচ্ছে। তবে রেলগেট থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কে পানি দেয়া হচ্ছে না। অতিরিক্ত ধুলাবালির কারনে অনেকেই শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের দাবি প্রতিদিন দুই বেলা যেন এ সড়কে পানি দেয়া হয়।
অপরদিকে রাস্তা নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাস্তা মজবুত হওয়ার প্রধান উপকরনের মধ্যে পানি অন্যতম। তবে এ রাস্তা নির্মাণে পানি দেয়া হচ্ছে না বললেই চলে। পর্যাপ্ত পরিমানে রাস্তায় পানি ঢালার পর রোলার করলে বালি ও পাথর ভালভাবে বসবে। তা না হলে অল্প দিনেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে তাদের অভিমত।
ছোট হাতুড়ি সাবল দিয়ে শুরু করা হয়েছে বহু কাঙ্খিত চুয়াডাঙ্গা শহরের রাস্তা নির্মাণ কাজ। গত সোমবার শহরের পুরাতন ঝিনাইদাহ বাসষ্ট্যান্ড সড়ক থেকে এ নির্মাণ করা হয়েছে। আর রাস্তা নির্মাণে শ্রমিকরা কাজ করার সময় রাস্তার একপাশ বন্ধ রাখা হচ্ছে। ফলে সব ধরনের যানবাহনকে একলেন দিয়ে চলাচল করায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে এলাকার জনগন ও পথচারীরা। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান সড়কটি মরনফাঁদে পরিণত হয়েছে। ৩ কিলোমিটার জুড়ে রাস্তাটি খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন এ সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন ও কয়েকলাখ মানুষের দুর্দশা চরমে পৌছেছে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হোসেন বলেন, যে ভাবে ধুলা উড়ছে চলাচল করা খুব কষ্ট। আমি বেশ কয়েকদিন থেকে মাস্ক ব্যবহার করছি। পানি দেওয়ার জন্য আমি পৌরসভার মেয়রকে বলব।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আদেশ থাকলেও সড়কে দেওয়া হচ্ছে না পানি : জনগণের ভোগান্তি

আপলোড টাইম : ০৯:৫৭:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

চুয়াডাঙ্গা রেলগেট থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত পুরো সড়ক ছেয়ে গেছে ধুলাবালিতে
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রশাসনের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরে রাস্তায় পানি না দেওয়ায় ধুলাবালিতে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে শহরে চলাচলরত হাজারো জনতা। সেই সাথে রাস্তার ধারে ব্যবসায়ীরা ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অনেকে ধুলাবালির হাত থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করলেও তা কোন কাজে আসছে না। বড়বাজার থেকে রেলবাজার পর্যন্ত রাস্তার একাংশের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় কিছুটা পানি দেয়া হচ্ছে। তবে রেলগেটের পর থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত রাস্তার কাজ শুরু না হওয়ায় ধুলায় মরুভুমিতে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী এই সড়কে প্রতিদিন সকাল-বিকাল পানি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আহবান জানিয়েছেন।
সড়ক বিভাগ জানায়, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২ বছর আগে। চুয়াডাঙ্গা অংশে ১৮.২৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করনের কাজ গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয়েছে। এ কাজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে শহরের বড় বাজার শহীদ চত্বর থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ২.২ কিলোমিটার হবে ৪ লেন। ফুটপাত সহ রাস্তাটি ৫৪ ফুট প্রসস্ত হবে অর্থাৎ ডিভাইডারের উভয় পাশে রাস্তাটি চওড়া হবে ২৭ ফুট। অনেক চেষ্টা তদবিরের পর গত বছরের ২০ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা শহরের ২.২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বড়বাজার থেকে রেলবাজার পর্যন্ত এক সাইডের কাজ চলমান রয়েছে। আর শহরের বাইরে রাস্তাটি হবে ফুটপাতসহ ৩০ ফুট প্রসস্ত। রাস্তাটি নির্মানে ঠিকাদার নিযুক্ত হয়েছেন আরএবি-আরসি প্রা: লি:, রানা বিল্ডার্স ও জহুরুল ইসলাম।
এদিকে রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় শহরজুড়ে ধুলা বালিতে ছেয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। ধুলা বালির কারনে রাস্তায় চলাচলরত মানুষের দৃষ্টিসীমা নিকটে চলে এসেছে। ৪০-৫০ গজ দুরের কোন বস্তু দেখা যায়না। টার্মিনাল থেকে বড়বাজার একবার আপ-ডাউন করলে তার অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে। সবচয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে প্রধান সড়কের ধারে রয়েছে যাদের দোকান। বেশিরভাগ দোকানি জানালেন ধুলায় তাদের দোকানের মাল নষ্ট হয়ে গেছে। কেনাবেচা কমে গেছে।
চুয়াডাঙ্গার ঝিনাইদহ বাসষ্টান্ডপাড়ার বাসিন্দা ও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বিপুল আশরাফ এবং চায়ের দোকানি ছানোয়ার বলেন, রেলবাজার থেকে বড়বাজার সড়কে মাঝে মাঝে রাস্তায় পানি দেয়া হচ্ছে। তবে রেলগেট থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কে পানি দেয়া হচ্ছে না। অতিরিক্ত ধুলাবালির কারনে অনেকেই শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের দাবি প্রতিদিন দুই বেলা যেন এ সড়কে পানি দেয়া হয়।
অপরদিকে রাস্তা নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাস্তা মজবুত হওয়ার প্রধান উপকরনের মধ্যে পানি অন্যতম। তবে এ রাস্তা নির্মাণে পানি দেয়া হচ্ছে না বললেই চলে। পর্যাপ্ত পরিমানে রাস্তায় পানি ঢালার পর রোলার করলে বালি ও পাথর ভালভাবে বসবে। তা না হলে অল্প দিনেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে তাদের অভিমত।
ছোট হাতুড়ি সাবল দিয়ে শুরু করা হয়েছে বহু কাঙ্খিত চুয়াডাঙ্গা শহরের রাস্তা নির্মাণ কাজ। গত সোমবার শহরের পুরাতন ঝিনাইদাহ বাসষ্ট্যান্ড সড়ক থেকে এ নির্মাণ করা হয়েছে। আর রাস্তা নির্মাণে শ্রমিকরা কাজ করার সময় রাস্তার একপাশ বন্ধ রাখা হচ্ছে। ফলে সব ধরনের যানবাহনকে একলেন দিয়ে চলাচল করায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে এলাকার জনগন ও পথচারীরা। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান সড়কটি মরনফাঁদে পরিণত হয়েছে। ৩ কিলোমিটার জুড়ে রাস্তাটি খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন এ সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন ও কয়েকলাখ মানুষের দুর্দশা চরমে পৌছেছে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হোসেন বলেন, যে ভাবে ধুলা উড়ছে চলাচল করা খুব কষ্ট। আমি বেশ কয়েকদিন থেকে মাস্ক ব্যবহার করছি। পানি দেওয়ার জন্য আমি পৌরসভার মেয়রকে বলব।