ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আজ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৭৪৭ বার পড়া হয়েছে

hamidur-rahmanঝিনাইদহ অফিস: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ শুক্রবার। শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে মহেশপুর উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসুচির আয়োজন করেছে। এর মধ্যে আলোচনা সভা, স্মৃতি চারণ ও দোয়া মাহফিল। এছাড়া ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর এই দিনে ৩৪ বিঘা জমির উপর নির্মিত বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান ইকোপার্কের উদ্বোধন করা হবে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হামিদুর রহমান যে গ্রামটিতে বেড়ে উঠছে সেই খোর্দ্দ খালিশপুর গ্রামটির নামকরণ করা হোক হামিদনগর। ঝিনাইদহ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মহেশপুর উপজেলা। সে উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামের নাম খোর্দ্দ খালিশপুর। এ গ্রামেই বাংলাদেশের সূর্য সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুরের শৈশব-কৈশর, বেড়ে ওঠা। দারিদ্রতার কারণে তিনি পড়াশুনা করতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে ভারতে প্রশিক্ষণ নেন। তারপর তিনি  বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। তাকে জেড ফোর্সের অধিনস্ত করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের জন্ম ১৯৪৫ সালে ভারতের নদীয়া জেলার ডুমুরিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তে ধলাই পাক সেনা ঘাটি আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী। সেই যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও রণকৌশল দেখান তিনি। এ সময় পাক সেনাদের গুলিতে তিনি শহীদ হন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত আমবাসা নামক স্থানে একটি মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়। সুদীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর হামিদুরের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করে বাংলাদেশ সরকার। বীরশ্রেষ্ঠের নামে ঝিনাইদহে আছে একটি সরকারি কলেজ,  একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি রাস্তা এবং জেলা শহরে একটি স্টেডিয়াম। কিন্তু এলাকাবাসী দীর্ঘদিনের দাবি তার নিজ গ্রামটির নাম হামিদনগর করা হোক। ২০০৮ সালের ৯ মার্চ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের সামনে স্মৃতি জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের ৪নং সেক্টর কমান্ডার বীর উত্তম (অবঃ) মেজর জেনারেল সি আর দত্ত। জাদুঘর উদ্বোধনকালে তত্বাবধায়ক সরকারের স্থানীয় সরকার পল¬ী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবাল খোদ্দ খালিশপুর গ্রামের নাম  হামিদনগর ঘোষণা দিলেও আজ পর্যন্ত তা কাগজে কলমে কার্যকর হয়নি। তবে বীরশ্রেষ্ঠের ছোট ভাই ফজলুর রহমান দাবি করেন সরকারের সদইচ্ছার কারণেই এখনো এই গ্রামের নাম কাগজে কলমে হামিদনগর হয়নি। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশাফুর রহমান জানান, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ঝিনাইদহ তথা সারা বাংলাদেশের গর্ব। তার মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পালন করবে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হামিদুর রহমানের নামে শুক্রবার একটি ইকোপার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ঝিনাইদহ ৩ আসনের সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ ও জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী

আপলোড টাইম : ০১:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

hamidur-rahmanঝিনাইদহ অফিস: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ শুক্রবার। শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে মহেশপুর উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসুচির আয়োজন করেছে। এর মধ্যে আলোচনা সভা, স্মৃতি চারণ ও দোয়া মাহফিল। এছাড়া ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর এই দিনে ৩৪ বিঘা জমির উপর নির্মিত বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান ইকোপার্কের উদ্বোধন করা হবে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হামিদুর রহমান যে গ্রামটিতে বেড়ে উঠছে সেই খোর্দ্দ খালিশপুর গ্রামটির নামকরণ করা হোক হামিদনগর। ঝিনাইদহ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মহেশপুর উপজেলা। সে উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামের নাম খোর্দ্দ খালিশপুর। এ গ্রামেই বাংলাদেশের সূর্য সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুরের শৈশব-কৈশর, বেড়ে ওঠা। দারিদ্রতার কারণে তিনি পড়াশুনা করতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে ভারতে প্রশিক্ষণ নেন। তারপর তিনি  বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। তাকে জেড ফোর্সের অধিনস্ত করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের জন্ম ১৯৪৫ সালে ভারতের নদীয়া জেলার ডুমুরিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তে ধলাই পাক সেনা ঘাটি আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী। সেই যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও রণকৌশল দেখান তিনি। এ সময় পাক সেনাদের গুলিতে তিনি শহীদ হন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত আমবাসা নামক স্থানে একটি মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়। সুদীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর হামিদুরের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করে বাংলাদেশ সরকার। বীরশ্রেষ্ঠের নামে ঝিনাইদহে আছে একটি সরকারি কলেজ,  একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি রাস্তা এবং জেলা শহরে একটি স্টেডিয়াম। কিন্তু এলাকাবাসী দীর্ঘদিনের দাবি তার নিজ গ্রামটির নাম হামিদনগর করা হোক। ২০০৮ সালের ৯ মার্চ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের সামনে স্মৃতি জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের ৪নং সেক্টর কমান্ডার বীর উত্তম (অবঃ) মেজর জেনারেল সি আর দত্ত। জাদুঘর উদ্বোধনকালে তত্বাবধায়ক সরকারের স্থানীয় সরকার পল¬ী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবাল খোদ্দ খালিশপুর গ্রামের নাম  হামিদনগর ঘোষণা দিলেও আজ পর্যন্ত তা কাগজে কলমে কার্যকর হয়নি। তবে বীরশ্রেষ্ঠের ছোট ভাই ফজলুর রহমান দাবি করেন সরকারের সদইচ্ছার কারণেই এখনো এই গ্রামের নাম কাগজে কলমে হামিদনগর হয়নি। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশাফুর রহমান জানান, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ঝিনাইদহ তথা সারা বাংলাদেশের গর্ব। তার মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পালন করবে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হামিদুর রহমানের নামে শুক্রবার একটি ইকোপার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ঝিনাইদহ ৩ আসনের সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ ও জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার।