ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আগের ভাড়ায় গণপরিবহণ চলার সিদ্ধান্ত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ১২৮ বার পড়া হয়েছে

কঠোর নজরদারি প্রয়োজন
করোনাভাইরাস মহামারির আগে বাসে ভাড়ার যে হার ছিল, আজ থেকে সেই হারে ভাড়া নিয়ে গণপরিবহণ চলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত শনিবার নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ঢাকা সড়ক জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে একথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাস্ক বাধ্যতামূলক ও দাঁড়িয়ে যাত্রী না নেওয়ার শর্তে গণপরিবহণ আগের ভাড়ায় চলছে আজ থেকে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, এই শর্ত কি পরিবহণ মালিকরা মেনে চলবে। তা ছাড়া আসন ফাঁকা না রেখে আগের মতো বসলে করোনাঝুঁকি যে বেড়ে যাবে এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। অবশ্য এই সিদ্ধান্তের আগের চিত্রও সুখকর নয়। সব আসন তো পূর্ণই, তারপরও বাসের ভেতরে দাঁড়ানো যাত্রী, চালক-হেলপারসহ যাত্রীদেরও অনেকের মুখে নেই মাস্ক, নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার। রাজধানীর অধিকাংশ গণপরিবহণের চিত্র এমনই। অথচ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে তিন মাস আগে এমন বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহণ চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিনিময়ে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া। শুরুতে কিছুটা সচেতনতা দেখা গেলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাট, হাটবাজারের মতো গণপিরবহণেও এখন বলতে গেলে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই- যা ক্ষুব্ধ করছে যাত্রীসাধারণকে। ত্যক্ত-বিরক্ত যাত্রীদের কেউ আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার দাবি তুলছেন। আবার কেউ বলছেন, মহামারি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নজরদারি বাড়িয়ে বর্তমান নিয়মেই গণপরিবহণ চালানোর কথা। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। পরে অর্ধেক আসন খালি রাখাসহ কয়েকটি শর্তে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে ১ জুন গণপরিবহণ চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসিনতা দেখা দেওয়ায় যাত্রী অধিকার সংগঠন ও মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার দাবি ওঠে। যাত্রীদের অভিযোগ, যখন প্রশাসনের নজরদারি ছিল, তখন অনেক বাসেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হতো। পরে নজরদারি ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজার না রাখার পক্ষে পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের যুক্তি হচ্ছে- যাত্রীরাই ব্যবহার করতে চায় না, তাই বাসেও রাখা হয় না। এ কথা মোটেও সত্য নয়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, রাজধানীতে নিয়মনীতিহীন বিশৃঙ্খলভাবে চলছে গণপরিবহণ। জীবন-জীবিকার প্রশ্নে সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়ে স্বাস্থ?্যবিধি মেনে সবধরনের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দেয়। গণপরিবহণে চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও তাতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এর ফলে চরমভাবে বেড়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কিছু মানুষ গণপরিবহণ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। বাধ্য হয়েই তাদের গণপরিবহণে উঠতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, গণপরিবহণে যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা না হয় তা হলে সামনে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া জরুরি। সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যাতে যাত্রী নিতে না পারে সে জন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি জরুরি এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আগের ভাড়ায় গণপরিবহণ চলার সিদ্ধান্ত

আপলোড টাইম : ০৯:১৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০

কঠোর নজরদারি প্রয়োজন
করোনাভাইরাস মহামারির আগে বাসে ভাড়ার যে হার ছিল, আজ থেকে সেই হারে ভাড়া নিয়ে গণপরিবহণ চলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত শনিবার নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ঢাকা সড়ক জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে একথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাস্ক বাধ্যতামূলক ও দাঁড়িয়ে যাত্রী না নেওয়ার শর্তে গণপরিবহণ আগের ভাড়ায় চলছে আজ থেকে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, এই শর্ত কি পরিবহণ মালিকরা মেনে চলবে। তা ছাড়া আসন ফাঁকা না রেখে আগের মতো বসলে করোনাঝুঁকি যে বেড়ে যাবে এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। অবশ্য এই সিদ্ধান্তের আগের চিত্রও সুখকর নয়। সব আসন তো পূর্ণই, তারপরও বাসের ভেতরে দাঁড়ানো যাত্রী, চালক-হেলপারসহ যাত্রীদেরও অনেকের মুখে নেই মাস্ক, নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার। রাজধানীর অধিকাংশ গণপরিবহণের চিত্র এমনই। অথচ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে তিন মাস আগে এমন বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহণ চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিনিময়ে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া। শুরুতে কিছুটা সচেতনতা দেখা গেলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাট, হাটবাজারের মতো গণপিরবহণেও এখন বলতে গেলে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই- যা ক্ষুব্ধ করছে যাত্রীসাধারণকে। ত্যক্ত-বিরক্ত যাত্রীদের কেউ আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার দাবি তুলছেন। আবার কেউ বলছেন, মহামারি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নজরদারি বাড়িয়ে বর্তমান নিয়মেই গণপরিবহণ চালানোর কথা। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। পরে অর্ধেক আসন খালি রাখাসহ কয়েকটি শর্তে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে ১ জুন গণপরিবহণ চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসিনতা দেখা দেওয়ায় যাত্রী অধিকার সংগঠন ও মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার দাবি ওঠে। যাত্রীদের অভিযোগ, যখন প্রশাসনের নজরদারি ছিল, তখন অনেক বাসেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হতো। পরে নজরদারি ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজার না রাখার পক্ষে পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের যুক্তি হচ্ছে- যাত্রীরাই ব্যবহার করতে চায় না, তাই বাসেও রাখা হয় না। এ কথা মোটেও সত্য নয়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, রাজধানীতে নিয়মনীতিহীন বিশৃঙ্খলভাবে চলছে গণপরিবহণ। জীবন-জীবিকার প্রশ্নে সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়ে স্বাস্থ?্যবিধি মেনে সবধরনের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দেয়। গণপরিবহণে চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও তাতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এর ফলে চরমভাবে বেড়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কিছু মানুষ গণপরিবহণ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। বাধ্য হয়েই তাদের গণপরিবহণে উঠতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, গণপরিবহণে যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা না হয় তা হলে সামনে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া জরুরি। সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যাতে যাত্রী নিতে না পারে সে জন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি জরুরি এবং এর কোনো বিকল্প নেই।