ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান, চমক থাকছে কাউন্সিলে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / ২৩৬ বার পড়া হয়েছে

কঠোর অবস্থানে শেখ হাসিনা * ব্যাপক রদবদলের সম্ভাবনা * তরুণদের প্রাধান্য থাকবে
সমীকরণ প্রতিবেদন:
আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত দলে শুদ্ধি অভিযান চলবে। আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও এর আওতায় পড়বে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি, ইয়াবাখোর ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। দলের ভেতর বিভেদ সৃষ্টিকারী, বিদ্রোহী, অনুপ্রবেশকারী, তৃণমূলে যোগাযোগ রাখেন না- এ ধরনের নেতাদের খুঁজে বের করা হবে। এ ধরনের নেতাকর্মীর বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা, বিভিন্ন কমিটিসহ নানাভাবে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। সব রিপোর্ট এখন দলের সভাপতির টেবিলে। এগুলো থেকে বেছে বেছে নাম নিয়ে তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকাভুক্ত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোভাব অত্যন্ত কঠোর। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এ অভিযান সম্পন্ন করতে চান তিনি। শুদ্ধি অভিযান শেষেই শুরু হবে কাউন্সিল। এখানে গঠিত কমিটিতেই থাকবে চমকের ছড়াছড়ি। গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবেন পরীক্ষিত অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ নেতারা। যাদের মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের একদিন পর রোববার ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলে সব পর্যায়ের সম্মেলন শেষ করতে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে অনুযায়ী কাজ চলছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের যত বড় নেতাই হোক না কেন, অপকর্ম করলে কেউ ছাড় পাবে না। তিনি বলেন, যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেছে, তারা কেউই ছাড় পাবে না। তবে সবার বিরুদ্ধেই দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না, অনেকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতাকর্মীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সেল রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনও প্রধানমন্ত্রীর কাছে রয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) ভবনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন এবং সংরক্ষিত আসনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে চমক দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এটাই শেখ হাসিনার চমক নয়। আরও বড় চমক আসছে আওয়ামী লীগের ২০-২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সম্মেলনে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ, যুবলীগের মতো এবারের জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেককে বহিষ্কার, পদ থেকে অব্যাহতিসহ আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আর কোনো বিতর্কিত কেউ আসতে না পারে, সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান আওয়ামী লীগ প্রধান। সূত্র জানায়, এবারের কমিটিতে নতুনদের প্রাধান্য থাকছে। পারিবারিক ঐতিহ্য দেখে দল ও কমিটিতে নেয়া হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, দল চালানোর মতো যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা, কোন ধরনের লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করে, তা দেখা হবে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা গুরুত্ব পাবেন। তৃণমূল নেতা ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক, এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ আছে কি না, তা-ও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। পরিবার বা আত্মীয়স্বজনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী আছে কি না, সে দিকও খতিয়ে দেয়া হবে। ইতিমধ্যে এ ধরনের কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছেন দলের সভাপতি। এদের ভেতর থেকেই দায়িত্ব দিয়ে গঠন করা হবে নতুন কমিটি। এর বাইরেও সম্ভাব্য নেতার সন্ধান চলছে।
একাধিক নেতা জানান, শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে যুবলীগের কর্মকা-ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা অস্ত্রবাজি করেন, ক্যাডার পোষেণ, তারা সাবধান হয়ে যান। এসব বন্ধ করুন। নইলে যেভাবে কঠোরভাবে জঙ্গি ও মাদক ব্যবসায়ীদের দমন করা হয়েছে, একইভাবে এই অস্ত্রবাজদেরও দমন করা হবে। পাশাপাশি দলীয় ও সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, তাদেরও আত্মঅহমিকা ও ক্ষমতার জোরে দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা দলটি এবারের সম্মেলনকে ভিন্নমাত্রা দিতে নেতৃত্বে বড় চমক আনার পরিকল্পনা করছে। এতে বাদ পড়তে পারেন বর্তমান কমিটির অনেকে। অধিকতর যোগ্য শিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ প্রজন্ম, পারিবারিকভাবে ঐতিহ্যবাহী ও আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত- এমন নতুন মুখ আসতে পারে কমিটিতে। দলে বিভেদ সৃষ্টিকারী ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও মদদদাতা, তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন, নেশাখোর, মাদক ব্যবসায়ী ও অনুপ্রবেশকারীদের কমিটিতে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তোষামোদকারী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অস্ত্র মহড়াকারীদের কমিটিতে না রাখাসহ কঠোর বার্তা থাকছে আসন্ন সম্মেলনে। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২১-২২ অক্টোবর। সে হিসাবে চলতি বছরের অক্টোবরে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০-২১ ডিসেম্বর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শনিবার দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সম্মেলনের এই তারিখ ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ গতকাল সোমবার বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে বরাবরই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না। তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিকতার অভিযোগ নেই, দলবাজি বা নেতিবাচক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত নয় এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ যোগ্য তাদের হাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আসবে। নেতাদের কর্মক্ষমতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়টিও অগ্রাধিকার পাবে। তরুণদের কর্মদক্ষতা আর প্রবীণদের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। চমক একটি আপেক্ষিক বিষয়। মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন বিষয়ে হানিফ বলেন, ইতিমধ্যে সংগঠনগুলোর নেতাদের সম্মেলনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন হবে এটাই স্বাভাবিক।
জানা যায়, নির্ধারিত সময়ে (২১-২২ অক্টোবর) সম্মেলন করা নিয়ে দ্বিধা ছিল। এমনকি চলতি বছর সম্মেলন হবে কি হবে না, তা নিয়েও সন্দিহান ছিলেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। কিন্তু শনিবার সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণার পরপরই এ নিয়ে কার্মকা- শুরু করেন নেতারা। সিদ্ধান্তের একদিন পর রোববার ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলে সব পর্যায়ের সম্মেলন শেষ করতে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রত্যেকদিন বিকালে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলন নিয়ে কর্মপরিকল্পনা করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। দলের নেতৃত্ব নিয়ে হাইকমান্ডের কঠোর বার্তায় সাংগঠনিক কাজে সাবধানে পা ফেলছেন নেতারা। শনিবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সভায় যুবলীগ প্রসঙ্গে আলোচনার অবতারণা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক। বৈঠকের এজেন্ডায় উল্লেখ থাকা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। পরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শনিবার যুবলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা করেছিল। তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিসের টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে? চাঁদাবাজির টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল! নিজের জন্য এমন মিলাদ মাহফিল তিনি চান না। শেখ হাসিনা আরও বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে বের হননি, অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেননি। যখন দলের দুঃসময় ছিল, তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে দলের পক্ষে অবস্থান নেননি। এখন টানা তিনবার সরকারে আছি। অনেকের অনেক কিছু হয়েছে, কিন্তু আমার সেই দুর্দিনের কর্মীদের অবস্থা একই আছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভের কথা শুনে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। এ জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগে একটি ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। দলীয় কেউ কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে বিচারের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে শাস্তি দেয়া হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করা হবে। এই ট্রাইব্যুনালের সভাপতি যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
এদিকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে দলের সাংগঠনিক জেলা/মহানগর/উপজেলা/থানা/পৌর/ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সব মেয়াদ উত্তীর্ণ শাখাসমূহের সম্মেলন করতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পক্ষে পাঠানো এক চিঠিতে এই সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য গঠিত শেখ হাসিনার ৮টি সাংগঠনিক টিম তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। টিমের শীর্ষ নেতারা বিভাগভিত্তিক একটি তালিকাও জমা দিয়েছেন দলীয় সভাপতির কাছে। তালিকায় বিতর্কিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের জীবনবৃত্তান্তসহ বিভিন্ন কর্মকা- তালিকায় উল্লেখ করেছেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বড় চমকের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরই থাকতে পারেন। যদিও এ পদে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন। এদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পর্যায়ের নেতাও আছেন। এ ছাড়া সম্পাদকীয় পদের আরও দু’জনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আসতে পারে দলের প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকীয় পদে। কার্যনির্বাহী সদস্যে বরাবরের মতো নতুন মুখের আবির্ভাবই বেশি ঘটতে পারে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ব্যর্থতার দায় নিয়ে কমপক্ষে ৫ জনকে ফিরে যেতে হতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান, চমক থাকছে কাউন্সিলে

আপলোড টাইম : ১১:২৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

কঠোর অবস্থানে শেখ হাসিনা * ব্যাপক রদবদলের সম্ভাবনা * তরুণদের প্রাধান্য থাকবে
সমীকরণ প্রতিবেদন:
আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত দলে শুদ্ধি অভিযান চলবে। আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও এর আওতায় পড়বে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি, ইয়াবাখোর ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। দলের ভেতর বিভেদ সৃষ্টিকারী, বিদ্রোহী, অনুপ্রবেশকারী, তৃণমূলে যোগাযোগ রাখেন না- এ ধরনের নেতাদের খুঁজে বের করা হবে। এ ধরনের নেতাকর্মীর বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা, বিভিন্ন কমিটিসহ নানাভাবে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। সব রিপোর্ট এখন দলের সভাপতির টেবিলে। এগুলো থেকে বেছে বেছে নাম নিয়ে তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকাভুক্ত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোভাব অত্যন্ত কঠোর। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এ অভিযান সম্পন্ন করতে চান তিনি। শুদ্ধি অভিযান শেষেই শুরু হবে কাউন্সিল। এখানে গঠিত কমিটিতেই থাকবে চমকের ছড়াছড়ি। গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবেন পরীক্ষিত অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ নেতারা। যাদের মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের একদিন পর রোববার ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলে সব পর্যায়ের সম্মেলন শেষ করতে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে অনুযায়ী কাজ চলছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের যত বড় নেতাই হোক না কেন, অপকর্ম করলে কেউ ছাড় পাবে না। তিনি বলেন, যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেছে, তারা কেউই ছাড় পাবে না। তবে সবার বিরুদ্ধেই দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না, অনেকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতাকর্মীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সেল রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনও প্রধানমন্ত্রীর কাছে রয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) ভবনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন এবং সংরক্ষিত আসনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে চমক দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এটাই শেখ হাসিনার চমক নয়। আরও বড় চমক আসছে আওয়ামী লীগের ২০-২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সম্মেলনে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ, যুবলীগের মতো এবারের জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেককে বহিষ্কার, পদ থেকে অব্যাহতিসহ আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আর কোনো বিতর্কিত কেউ আসতে না পারে, সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান আওয়ামী লীগ প্রধান। সূত্র জানায়, এবারের কমিটিতে নতুনদের প্রাধান্য থাকছে। পারিবারিক ঐতিহ্য দেখে দল ও কমিটিতে নেয়া হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, দল চালানোর মতো যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা, কোন ধরনের লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করে, তা দেখা হবে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা গুরুত্ব পাবেন। তৃণমূল নেতা ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক, এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ আছে কি না, তা-ও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। পরিবার বা আত্মীয়স্বজনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী আছে কি না, সে দিকও খতিয়ে দেয়া হবে। ইতিমধ্যে এ ধরনের কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছেন দলের সভাপতি। এদের ভেতর থেকেই দায়িত্ব দিয়ে গঠন করা হবে নতুন কমিটি। এর বাইরেও সম্ভাব্য নেতার সন্ধান চলছে।
একাধিক নেতা জানান, শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে যুবলীগের কর্মকা-ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা অস্ত্রবাজি করেন, ক্যাডার পোষেণ, তারা সাবধান হয়ে যান। এসব বন্ধ করুন। নইলে যেভাবে কঠোরভাবে জঙ্গি ও মাদক ব্যবসায়ীদের দমন করা হয়েছে, একইভাবে এই অস্ত্রবাজদেরও দমন করা হবে। পাশাপাশি দলীয় ও সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, তাদেরও আত্মঅহমিকা ও ক্ষমতার জোরে দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা দলটি এবারের সম্মেলনকে ভিন্নমাত্রা দিতে নেতৃত্বে বড় চমক আনার পরিকল্পনা করছে। এতে বাদ পড়তে পারেন বর্তমান কমিটির অনেকে। অধিকতর যোগ্য শিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ প্রজন্ম, পারিবারিকভাবে ঐতিহ্যবাহী ও আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত- এমন নতুন মুখ আসতে পারে কমিটিতে। দলে বিভেদ সৃষ্টিকারী ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও মদদদাতা, তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন, নেশাখোর, মাদক ব্যবসায়ী ও অনুপ্রবেশকারীদের কমিটিতে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তোষামোদকারী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অস্ত্র মহড়াকারীদের কমিটিতে না রাখাসহ কঠোর বার্তা থাকছে আসন্ন সম্মেলনে। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২১-২২ অক্টোবর। সে হিসাবে চলতি বছরের অক্টোবরে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০-২১ ডিসেম্বর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শনিবার দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সম্মেলনের এই তারিখ ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ গতকাল সোমবার বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে বরাবরই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না। তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিকতার অভিযোগ নেই, দলবাজি বা নেতিবাচক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত নয় এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ যোগ্য তাদের হাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আসবে। নেতাদের কর্মক্ষমতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়টিও অগ্রাধিকার পাবে। তরুণদের কর্মদক্ষতা আর প্রবীণদের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। চমক একটি আপেক্ষিক বিষয়। মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন বিষয়ে হানিফ বলেন, ইতিমধ্যে সংগঠনগুলোর নেতাদের সম্মেলনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন হবে এটাই স্বাভাবিক।
জানা যায়, নির্ধারিত সময়ে (২১-২২ অক্টোবর) সম্মেলন করা নিয়ে দ্বিধা ছিল। এমনকি চলতি বছর সম্মেলন হবে কি হবে না, তা নিয়েও সন্দিহান ছিলেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। কিন্তু শনিবার সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণার পরপরই এ নিয়ে কার্মকা- শুরু করেন নেতারা। সিদ্ধান্তের একদিন পর রোববার ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলে সব পর্যায়ের সম্মেলন শেষ করতে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রত্যেকদিন বিকালে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলন নিয়ে কর্মপরিকল্পনা করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। দলের নেতৃত্ব নিয়ে হাইকমান্ডের কঠোর বার্তায় সাংগঠনিক কাজে সাবধানে পা ফেলছেন নেতারা। শনিবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সভায় যুবলীগ প্রসঙ্গে আলোচনার অবতারণা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক। বৈঠকের এজেন্ডায় উল্লেখ থাকা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। পরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শনিবার যুবলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা করেছিল। তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিসের টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে? চাঁদাবাজির টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল! নিজের জন্য এমন মিলাদ মাহফিল তিনি চান না। শেখ হাসিনা আরও বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে বের হননি, অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেননি। যখন দলের দুঃসময় ছিল, তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে দলের পক্ষে অবস্থান নেননি। এখন টানা তিনবার সরকারে আছি। অনেকের অনেক কিছু হয়েছে, কিন্তু আমার সেই দুর্দিনের কর্মীদের অবস্থা একই আছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভের কথা শুনে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। এ জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগে একটি ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। দলীয় কেউ কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে বিচারের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে শাস্তি দেয়া হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করা হবে। এই ট্রাইব্যুনালের সভাপতি যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
এদিকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে দলের সাংগঠনিক জেলা/মহানগর/উপজেলা/থানা/পৌর/ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সব মেয়াদ উত্তীর্ণ শাখাসমূহের সম্মেলন করতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পক্ষে পাঠানো এক চিঠিতে এই সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য গঠিত শেখ হাসিনার ৮টি সাংগঠনিক টিম তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। টিমের শীর্ষ নেতারা বিভাগভিত্তিক একটি তালিকাও জমা দিয়েছেন দলীয় সভাপতির কাছে। তালিকায় বিতর্কিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের জীবনবৃত্তান্তসহ বিভিন্ন কর্মকা- তালিকায় উল্লেখ করেছেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বড় চমকের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরই থাকতে পারেন। যদিও এ পদে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন। এদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পর্যায়ের নেতাও আছেন। এ ছাড়া সম্পাদকীয় পদের আরও দু’জনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আসতে পারে দলের প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকীয় পদে। কার্যনির্বাহী সদস্যে বরাবরের মতো নতুন মুখের আবির্ভাবই বেশি ঘটতে পারে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ব্যর্থতার দায় নিয়ে কমপক্ষে ৫ জনকে ফিরে যেতে হতে পারে।