ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করার দায়িত্ব কার?

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৩১২ বার পড়া হয়েছে

অনেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ভুলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন। এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ঢালাও ব্যবহার মানুষের জীবন আজ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া দুনিয়ার কোথাও ওষুধ বিক্রির নিয়ম নেই। বাংলাদেশে শুধু ব্যতিক্রম। ফার্মেসিতে গিয়ে সহজে পাওয়া যাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। এটি যেন দেখভালের কেউ নেই। গত বুধবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে ৪০০ লোক মারা গেছেন। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করছেন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই। ওষুধ বিশেষজ্ঞদের মতে, অপ্রয়োজনে, অসম্পূর্ণ মেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে ব্যবহারকারীর শরীরে তার অজান্তে স্থায়ীভাবে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াও ওষুধ বিক্রেতা, পল্লী চিকিৎসক অথবা সাধারণ মানুষের পরামর্শেও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কিনছে, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় এবং অযৌক্তিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃত রোগ নির্ণয় ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে সেই অ্যান্টিবায়োটিকের আর কার্যকারিতা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিস্তার ঘটছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স জীবাণুর। এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, রাজধানীর ৫৫.৭০ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে ঢাকা মহানগরে যেসব রোগজীবাণুর সংক্রমণ ঘটে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজ করে না। এ তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে রাজধানীর বাইরের বাস্তবতারও মিল থাকার কথা। ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে মানুষের প্রধান অস্ত্র অ্যান্টিবায়োটিক। এটি ব্যবহারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আমাদের দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে নানা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই সময়। সুতরাং অ্যান্টিবায়োটিক পুরো কোর্স বিক্রয়ের গাইডলাইন এবং ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ওপর যথাযথ কড়াকড়ি আরোপ করা প্রয়োজন। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া ঠিক নয়- এ বিষয়ে আমাদেরও সচেতন হতে হবে। যে কোনো সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করার দায়িত্ব কার?

আপলোড টাইম : ১১:৫১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

অনেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ভুলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন। এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ঢালাও ব্যবহার মানুষের জীবন আজ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া দুনিয়ার কোথাও ওষুধ বিক্রির নিয়ম নেই। বাংলাদেশে শুধু ব্যতিক্রম। ফার্মেসিতে গিয়ে সহজে পাওয়া যাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। এটি যেন দেখভালের কেউ নেই। গত বুধবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে ৪০০ লোক মারা গেছেন। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করছেন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই। ওষুধ বিশেষজ্ঞদের মতে, অপ্রয়োজনে, অসম্পূর্ণ মেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে ব্যবহারকারীর শরীরে তার অজান্তে স্থায়ীভাবে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াও ওষুধ বিক্রেতা, পল্লী চিকিৎসক অথবা সাধারণ মানুষের পরামর্শেও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কিনছে, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় এবং অযৌক্তিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃত রোগ নির্ণয় ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে সেই অ্যান্টিবায়োটিকের আর কার্যকারিতা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিস্তার ঘটছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স জীবাণুর। এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, রাজধানীর ৫৫.৭০ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে ঢাকা মহানগরে যেসব রোগজীবাণুর সংক্রমণ ঘটে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজ করে না। এ তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে রাজধানীর বাইরের বাস্তবতারও মিল থাকার কথা। ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে মানুষের প্রধান অস্ত্র অ্যান্টিবায়োটিক। এটি ব্যবহারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আমাদের দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে নানা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই সময়। সুতরাং অ্যান্টিবায়োটিক পুরো কোর্স বিক্রয়ের গাইডলাইন এবং ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ওপর যথাযথ কড়াকড়ি আরোপ করা প্রয়োজন। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া ঠিক নয়- এ বিষয়ে আমাদেরও সচেতন হতে হবে। যে কোনো সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন।