ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলন ওসি তোজাম্মেল হককে প্রত্যাহারের দাবী ব্যবসায়ীক নেতৃবৃন্দের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৫২:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৩৭৩ বার পড়া হয়েছে

DSCN1459

শহর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঘন ঘন চুরিসহ ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের সাথে সদর থানার ওসির অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় প্রেসক্লাবে দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়া এই সংবাদ সম্মেলনে সদর থানার অফিসার ইন-চার্জ তোজাম্মেল হকের প্রত্যাহারের দাবী তোলেন চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ। প্রত্যাহার না করা হলে ভবিষতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার লিখিত বক্তব্যে জানান, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির বাড়ি থেকে মাত্র একশ গজ দূরে অবস্থিত ন্যাশনাল ব্যাটারী হাউসে ট্রাক ভিড়িয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চুরি সংগঠিত হয়েছে। দোকানের সামনে ট্রাকের চাকায় স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। চোরেরা ২’শ ৪৫টি ব্যাটারী ও ১২টি আইপিএস নিয়ে গেছে। যার মূল্য প্রায় ২৪লাখ টাকা। ওই দিন সকালে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি ঘটনার বর্ণনা শুনে দুঃখ প্রকাশ না  করে ওই দোকান ব্যবসায়ীকেই দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, ওই দোকানে কখনও ২৪লাখ টাকার মালামাল ছিল না। মালামাল থাকলে ধূলোর দাগ থাকতো। তিনি চুরি হওয়া মালামালের মূল্য ৫০ থেকে ৬০হাজার বলে মন্তব্য করেন। ওই কারনে তিনি ব্যবসায়ীদের ছেঁচড়া বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে দোকানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। পুলিশ ব্যবসায়ীদের দোকান পাহারা দিতে পারবেনা বলেও তিনি জানিয়ে দেন। একের পর এক চুরির ঘটনা ব্যবসায়ীদের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। তারা পারছেন না শান্তিতে ব্যবসা করতে। আপনারা জেনে বিস্মিত হবেন, চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকে শহরে একের পর এক দুঃসাহসিক চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি যোগদানের পূর্বেরও শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। তিনি আসার পর শহরে তেমন পুলিশি টহলের দেখা মেলেনা। তা না হলে শহরে দীর্ঘ সময় ধরে ট্রাক ভিড়িয়ে চুরি হল। কিন্তু পুলিশের গাড়ি একবারও ওই রাস্তায় টহলে যায়নি। এছাড়া তিনি বড়বাজারের দোকানিদের বিভিন্ন সময় অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেন। নান ভয়ভীতি দেখান। রাতে শহরে বিভিন্ন নাইট কোচ এসে পৌছায়। যাত্রীরা বড়বাজার শহীদ হাসান চত্বরে অবস্থান করে একটু বিশ্রাম নিয়ে সকালে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তিনি রাত ১২টার পর ওই এলাকার সকল দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এরপর দোকান খোলা রাখার কয়েকজন দোকানীকেও আটক করে থানায় নিয়ে অত্যাচার করেন তিনি। এ বিষয়ে আমরা তার সাথে আলোচনা করতে গেলে তিনি বলেন, রাতে যাত্রীরা কোথায় যাবে তার দায়িত্ব পুলিশ নিয়ে রাখেনি। প্রয়োজনে তারা স্টেশনে গিয়ে রাত কাটাবে। কিন্তু ওই এলাকার একটিও দোকান খোলা থাকবে না। পারলে যাত্রীদের দায়িত্ব আপনারা নেন। এদিকে নাইট কোচ এসে যাত্রীরা পড়ছেন বিপাকে। তারা রাত কাটাতে স্টেশনে যাওয়ার সময় ঘটছে ছিনতাইসহ নানা অঅপরাধমূলক ঘটনা। চুয়াডাঙ্গা ইতিহাসে গত ১৫-২০ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। অত্যন্ত দুঃখেরসাথে জানাচ্ছি যে, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আচরণ সন্তোষজনক নয়। তিনি সাধারণ মানুষের সাথে অতি কর্কশ ভাষায় কথা বলেন। ব্যবসায়ীরা কোন বিপনে পড়লে তিনি সহযোগীতা না করে তিরস্কার করেন। এমতাবস্থায় আপনাদের মাধ্যমে পুলিশ সুপারের কাছে শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে সদর থানার ওই অযোগ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও মানববন্ধন কর্মসূচিসহ বৃহত্তর কর্মসূচি দেবে জেলা দোকন মালিক সমিতি। আর ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজের চুরি যাওয়া মালামালের সন্ধান দিতে পারলে সন্ধানদাতাকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষনা করা হলো। সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলন ওসি তোজাম্মেল হককে প্রত্যাহারের দাবী ব্যবসায়ীক নেতৃবৃন্দের

আপলোড টাইম : ০২:৫২:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

DSCN1459

শহর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঘন ঘন চুরিসহ ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের সাথে সদর থানার ওসির অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় প্রেসক্লাবে দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়া এই সংবাদ সম্মেলনে সদর থানার অফিসার ইন-চার্জ তোজাম্মেল হকের প্রত্যাহারের দাবী তোলেন চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ। প্রত্যাহার না করা হলে ভবিষতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার লিখিত বক্তব্যে জানান, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির বাড়ি থেকে মাত্র একশ গজ দূরে অবস্থিত ন্যাশনাল ব্যাটারী হাউসে ট্রাক ভিড়িয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চুরি সংগঠিত হয়েছে। দোকানের সামনে ট্রাকের চাকায় স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। চোরেরা ২’শ ৪৫টি ব্যাটারী ও ১২টি আইপিএস নিয়ে গেছে। যার মূল্য প্রায় ২৪লাখ টাকা। ওই দিন সকালে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি ঘটনার বর্ণনা শুনে দুঃখ প্রকাশ না  করে ওই দোকান ব্যবসায়ীকেই দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, ওই দোকানে কখনও ২৪লাখ টাকার মালামাল ছিল না। মালামাল থাকলে ধূলোর দাগ থাকতো। তিনি চুরি হওয়া মালামালের মূল্য ৫০ থেকে ৬০হাজার বলে মন্তব্য করেন। ওই কারনে তিনি ব্যবসায়ীদের ছেঁচড়া বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে দোকানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। পুলিশ ব্যবসায়ীদের দোকান পাহারা দিতে পারবেনা বলেও তিনি জানিয়ে দেন। একের পর এক চুরির ঘটনা ব্যবসায়ীদের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। তারা পারছেন না শান্তিতে ব্যবসা করতে। আপনারা জেনে বিস্মিত হবেন, চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকে শহরে একের পর এক দুঃসাহসিক চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি যোগদানের পূর্বেরও শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। তিনি আসার পর শহরে তেমন পুলিশি টহলের দেখা মেলেনা। তা না হলে শহরে দীর্ঘ সময় ধরে ট্রাক ভিড়িয়ে চুরি হল। কিন্তু পুলিশের গাড়ি একবারও ওই রাস্তায় টহলে যায়নি। এছাড়া তিনি বড়বাজারের দোকানিদের বিভিন্ন সময় অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেন। নান ভয়ভীতি দেখান। রাতে শহরে বিভিন্ন নাইট কোচ এসে পৌছায়। যাত্রীরা বড়বাজার শহীদ হাসান চত্বরে অবস্থান করে একটু বিশ্রাম নিয়ে সকালে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তিনি রাত ১২টার পর ওই এলাকার সকল দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এরপর দোকান খোলা রাখার কয়েকজন দোকানীকেও আটক করে থানায় নিয়ে অত্যাচার করেন তিনি। এ বিষয়ে আমরা তার সাথে আলোচনা করতে গেলে তিনি বলেন, রাতে যাত্রীরা কোথায় যাবে তার দায়িত্ব পুলিশ নিয়ে রাখেনি। প্রয়োজনে তারা স্টেশনে গিয়ে রাত কাটাবে। কিন্তু ওই এলাকার একটিও দোকান খোলা থাকবে না। পারলে যাত্রীদের দায়িত্ব আপনারা নেন। এদিকে নাইট কোচ এসে যাত্রীরা পড়ছেন বিপাকে। তারা রাত কাটাতে স্টেশনে যাওয়ার সময় ঘটছে ছিনতাইসহ নানা অঅপরাধমূলক ঘটনা। চুয়াডাঙ্গা ইতিহাসে গত ১৫-২০ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। অত্যন্ত দুঃখেরসাথে জানাচ্ছি যে, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আচরণ সন্তোষজনক নয়। তিনি সাধারণ মানুষের সাথে অতি কর্কশ ভাষায় কথা বলেন। ব্যবসায়ীরা কোন বিপনে পড়লে তিনি সহযোগীতা না করে তিরস্কার করেন। এমতাবস্থায় আপনাদের মাধ্যমে পুলিশ সুপারের কাছে শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে সদর থানার ওই অযোগ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও মানববন্ধন কর্মসূচিসহ বৃহত্তর কর্মসূচি দেবে জেলা দোকন মালিক সমিতি। আর ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজের চুরি যাওয়া মালামালের সন্ধান দিতে পারলে সন্ধানদাতাকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষনা করা হলো। সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।