ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অবৈধ পথে টাকা যাচ্ছে বিদেশে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২০
  • / ১৯৫ বার পড়া হয়েছে

নীতিমালা সহজ করতে উদ্যোগ নিন
বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে বিদেশে যান। প্রতিবেশী ভারতসহ সিঙ্গাপুর ও ব্যাংকক হচ্ছে রোগীদের পছন্দের জায়গা। এসব দেশের অনেক হাসপাতালের একাধিক সেবাকেন্দ্র রয়েছে বাংলাদেশে। এসব সেবাকেন্দ্র থেকে রোগীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও চিকিৎসকের যোগাযোগ সম্পন্ন করার কাজটি করা হয়ে থাকে। বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ব্যয় কী পরিমাণ হতে পারে, চিকিৎসা ব্যয়ের বাইরে আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচের বিষয়টিও এসব সেবাকেন্দ্র থেকে ধারণা পাওয়া যায়। গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ। তাদের চিকিৎসা ব্যয় ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি ডলার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কিভাবে যাচ্ছে বিদেশে? চিকিৎসা বা ভ্রমণ যেকোনো কারণেই বিদেশে যাওয়ার সময় অর্থ নিয়ে যাওয়ার একটি নিয়ম আছে। নির্দিষ্ট পরিমাণের বাইরে অর্থ নিয়ে যাওয়া যাবে না। চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে নিয়ম রয়েছে, তা মেনে চলা হলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাইরে যাওয়ার কথা নয়। তাহলে টাকা যাচ্ছে কিভাবে? প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, বৈদেশিক বিনিময় লেনদেন নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী দেশে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলো চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ প্রতি যাত্রায় সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা ছাড় করতে পারে। ব্যাংক থেকে এই ১০ হাজার ডলার ছাড়করণের ক্ষেত্রে রোগীদের সরকারি মেডিক্যাল বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সুপারিশসংবলিত প্রত্যয়নপত্র ব্যাংকে দাখিল করার নিয়ম রয়েছে। এটি দাখিল না করে এ সুবিধা নিতে পারবে না বিদেশগামী রোগীরা। অথচ ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে এখন আর মেডিক্যাল ভিসার জন্য সরকারি মেডিক্যাল বোর্ড বা স্থানীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সুপারিশ প্রয়োজন হয় না। ফলে রোগীরাও বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা নিতে আগ্রহী হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে নিয়মের কড়াকড়ি রয়েছে। আর সে কারণেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে হুন্ডি ও অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক উপায়ে বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে নেওয়া হচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ। এ ধরনের অপ্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের প্রবণতাও বাড়ছে। এ ছাড়া অনেকেই ভ্রমণ কোটায় বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে চিকিৎসায় খরচ করছে। চিকিৎসা কোটায় বৈদেশিক মুদ্রা নেওয়ার সুযোগ রাখা হলেও নীতিমালার এই শর্তের কারণে রোগীরা এতে আগ্রহ দেখায় না। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে যে কড়াকড়ি নিয়ম রয়েছে তা উঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। আর তাহলেই চিকিৎসাসেবা নিতে বিদেশগামীদের মধ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে টাকা নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অবৈধ পথে টাকা যাচ্ছে বিদেশে

আপলোড টাইম : ১০:৪১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২০

নীতিমালা সহজ করতে উদ্যোগ নিন
বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে বিদেশে যান। প্রতিবেশী ভারতসহ সিঙ্গাপুর ও ব্যাংকক হচ্ছে রোগীদের পছন্দের জায়গা। এসব দেশের অনেক হাসপাতালের একাধিক সেবাকেন্দ্র রয়েছে বাংলাদেশে। এসব সেবাকেন্দ্র থেকে রোগীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও চিকিৎসকের যোগাযোগ সম্পন্ন করার কাজটি করা হয়ে থাকে। বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ব্যয় কী পরিমাণ হতে পারে, চিকিৎসা ব্যয়ের বাইরে আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচের বিষয়টিও এসব সেবাকেন্দ্র থেকে ধারণা পাওয়া যায়। গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ। তাদের চিকিৎসা ব্যয় ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি ডলার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কিভাবে যাচ্ছে বিদেশে? চিকিৎসা বা ভ্রমণ যেকোনো কারণেই বিদেশে যাওয়ার সময় অর্থ নিয়ে যাওয়ার একটি নিয়ম আছে। নির্দিষ্ট পরিমাণের বাইরে অর্থ নিয়ে যাওয়া যাবে না। চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে নিয়ম রয়েছে, তা মেনে চলা হলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাইরে যাওয়ার কথা নয়। তাহলে টাকা যাচ্ছে কিভাবে? প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, বৈদেশিক বিনিময় লেনদেন নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী দেশে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলো চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ প্রতি যাত্রায় সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা ছাড় করতে পারে। ব্যাংক থেকে এই ১০ হাজার ডলার ছাড়করণের ক্ষেত্রে রোগীদের সরকারি মেডিক্যাল বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সুপারিশসংবলিত প্রত্যয়নপত্র ব্যাংকে দাখিল করার নিয়ম রয়েছে। এটি দাখিল না করে এ সুবিধা নিতে পারবে না বিদেশগামী রোগীরা। অথচ ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে এখন আর মেডিক্যাল ভিসার জন্য সরকারি মেডিক্যাল বোর্ড বা স্থানীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সুপারিশ প্রয়োজন হয় না। ফলে রোগীরাও বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা নিতে আগ্রহী হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে নিয়মের কড়াকড়ি রয়েছে। আর সে কারণেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে হুন্ডি ও অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক উপায়ে বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে নেওয়া হচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ। এ ধরনের অপ্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের প্রবণতাও বাড়ছে। এ ছাড়া অনেকেই ভ্রমণ কোটায় বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে চিকিৎসায় খরচ করছে। চিকিৎসা কোটায় বৈদেশিক মুদ্রা নেওয়ার সুযোগ রাখা হলেও নীতিমালার এই শর্তের কারণে রোগীরা এতে আগ্রহ দেখায় না। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে যে কড়াকড়ি নিয়ম রয়েছে তা উঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। আর তাহলেই চিকিৎসাসেবা নিতে বিদেশগামীদের মধ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে টাকা নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।