সমীকরণ ডেস্ক: নির্বাচন কমিশনে সরকারের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, দায়িত্ব পালনে তিনি অটল এবং আপসহীন থাকবেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ছোট-বড় সব রাজনৈতিক দলকে আমরা আস্থায় আনতে পারব, এই আত্মবিশ্বাস আমাদের আছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে শপথ নেয়ার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কেএম নুরুল হুদা এসব কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে শপথ নিয়েছি। আমরা সংবিধান এবং সংবিধানের অধীনে প্রণীত আইন-কানুন এবং বিধি-বিধানের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালনে অটল এবং আপসহীন থাকব। নির্বাচন কমিশনের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান কাজে লাগাব এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দক্ষতা ব্যবহার করব। এ জন্য সরকার, সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সংবাদমাধ্যম এবং জনগণের সহযোগিতা প্রত্যাশা করব। দায়িত্ব নেয়ার পর প্রাথমিক কাজের বিষয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, প্রথম কাজ হবে আমার কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা এবং সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করব, বুঝব। কি সমস্যা আছে, সেগুলো নির্ধারণ করে এর সমাধান কি হবে, তা প্রণয়ন করা। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ একটাই, সেটা হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া। এ ব্যাপারে কাজ করা, পরিকল্পনা করা। কিন্তু বিষয়টি এই মুহূর্তে বলতে পারব না। আমার সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তারপরে নির্ধারণ করব। সরকারের প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করার বিষয়ে সাংবাদিকদের করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, সরকারের প্রতি আহ্বান, সরকার যেন প্রভাব বিস্তার না করে। সরকারের প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই। আমরা সাংবিধানিকভাবে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করব। কারো প্রভাব বিস্তারে প্রভাবিত হব না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল বা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, ‘আজকে শপথ নেয়ার পর কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। যে শপথ নিয়েছি, নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, সেভাবেই কাজ করব।’ আওয়ামী লীগের কোনো নির্বাচনী বোর্ডের দায়িত্বেও ছিলেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন নুরুল হুদা। জনতার মঞ্চের সঙ্গে তার সম্পৃক্তার অভিযোগও নাকচ করে দেন নুরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক না। মিথ্যা কথা। এর আগে বেলা তিনটার সময় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সিইসি পদে নবনিযুক্ত কে এম নুরুল হুদা ও চার নির্বাচন কমিশনার শপথ নেন। সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনারকে শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। কেএম নূরুল হুদা হচ্ছেন দেশের দ্বাদশ সিইসি, যিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭৩ সালে। তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী। নতুন চার নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে এ যাবতকালে মোট ২৭ জন কমিশনারকে পাবে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সাংবিধানিক সংস্থাটি।